সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মার্কিন পতাকা নামিয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে উড়লো ফিলিস্তিনি পতাকা! বিএনপি সাংগঠনিকভাবে আরও দুর্বল হচ্ছে: ওবায়দুল কাদের বিষয়টি আদালতেই সুরাহার চেষ্টা করব, হাইকোর্টের নির্দেশনা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী গাজার ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করতে সৌদিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড চুয়াডাঙ্গায় দেশ থেকে আইনের শাসন উধাও হয়ে গেছে : মির্জা ফখরুল স্বর্ণের দাম ভরিতে কমলো ১১৫৫ টাকা তীব্র তাপপ্রবাহ : স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখতে নির্দেশ হাইকোর্টের মঙ্গলবারও ঢাকাসহ ২৭ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে টর্নেডোর আঘাতে নিহত ৫
আইনজীবী পাননি মিন্নি, যা বললেন শাহদীন মালিক

আইনজীবী পাননি মিন্নি, যা বললেন শাহদীন মালিক

স্বদেশ ডেস্ক:

বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। গতকাল বুধবার বিকেলে মিন্নিকে বরগুনার আদালতে হাজির করে পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত পাঁচ দিন মঞ্জুর করেন। ওই সময় মিন্নির পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে দাঁড়াননি। এ কারণে সরাসরি তার সঙ্গে কথা বলেন বিচারক।

আজ বৃহস্পতিকার সন্ধ্যায় এ বিষয় নিয়ে সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক।

এই আইনজীবী বলেন, ‘একজন বা দুইজন আইনজীবী ব্যক্তিগত কারণে বা বিভিন্ন বিবেচনায় মামলা নাও নিতে পারেন। কিন্তু সবাই মিলে যদি সিদ্ধান্ত নেন যে, মিন্নির পক্ষে দাঁড়াবেন না, তাহলে এটা আইনজীবীদের পেশাগত আচরণ বিরোধী। এ ধরনের যদি কোনো দলগত সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে, তাহলে মিন্নির বাবা বা মিন্নি বার কাউন্সিলে অভিযোগ করলে আইজীবীদের সনদ বাতিল হতে পারে।’

শাহদীন মালিক বলেন, ‘কোনো ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তের সাথে পরামর্শ এবং আইনি সহায়তা লাভ-এটা প্রত্যেক ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার। এটা সংবিধানে ৩৩ অনুচ্ছেদে বলা আছে। অতএব মিন্নি যদি আইনজীবীর কাছে আইনি সহায়তা না পায়, তাহলে তার সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘিত হবে।’

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, ‘আমি তিনজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম, তাদের দাঁড়ানোর কথা ছিল, আমার মনে হয় প্রতিপক্ষদের ভয়ে তারা আমার মেয়ের পক্ষে দাঁড়াননি।’

মোজাম্মেল হোসেন আরও বলেন, ‘আমার মেয়েকে বুধবার আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালতে আমার মেয়ের পক্ষে অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন, অ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার নাসির ও অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা কাদেরের দাঁড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু কী কারণে দাঁড়াননি আমি বলতে পারবো না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘মিন্নির বাবা মোজাম্মেল তার মেয়ের পক্ষে আমাকে দাঁড়ানোর কথা বলেছিল। কিন্তু আমি তার পক্ষে দাঁড়াইনি। তবে কী কারণে দাঁড়াইনি তা বলতে পারব না।’

অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহলের চাপে মিন্নির পক্ষে দাঁড়াতে চাচ্ছেন না কোনো আইনজীবী।

এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, ‘কারও চাপে ভয় পেয়ে যদি আইনজীবীরা না দাঁড়ান, এটা তো বিরাট অপরাধ। এরকম যদি কোনো অভিযোগ আসে, তবে পুলিশের উচিত হবে এটা খতিয়ে দেখা, তদন্ত করা। যে কারও চাপে বা বাধার কারণে যে আইনজীবীরা বিরত থাকছেন, এটাতো ফৌজদারি অপরাধ। তখন মিন্নির বাবা গিয়ে পুলিশের কাছে এফআইআর করতে পারে যে, অমুকের চাপের কারণে আমি কোনো আইনজীবী পাচ্ছি না। তখন এমপি হোক, মিনিস্টার হোক পুলিশের দায়িত্ব হবে তদন্ত করা।’

স্বামী রিফাত শরীফকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা রিমান্ডে থাকা মিন্নি স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফ হোসেন। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি।

এ হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গে মিন্নি যুক্ত ছিলেন জানিয়ে এসপি মারুফ হোসেন বলেন, ‘যারা হত্যাকারী ছিল তাদের সঙ্গে মিন্নি শুরু থেকেই যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় অংশ নেন। এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হওয়ার আগে এর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যা যা করা দরকার, তার সবকিছুই তিনি করেছেন। হত্যাকারীদের সঙ্গে হত্যা পরিকল্পনার মিটিংও করেছেন।’

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয় রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত মিন্নিসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২ জুলাই ভোরে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এখন পর্যন্ত ১০ আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877